মুসলিমদের আলাষ্কা ভ্রমন থেকে বিরত থাকা উচিত
বিশেষ করে রমজান মাসে তো ওমুখো হওয়াই উচিত না। শুধু আলাষ্কা না অন্যান্য আর্কটিক (N66° 33' 39" latitude এর উত্তরে) এলাকা যেমন গ্রীনল্যান্ড, সাইবেরিয়া, অথবা অ¨ান্টার্কটিক এলাকা (S66° 33' 39" latitude এর দক্ষিনে) তেও যাওয়া উচিত না। স্বল্প সময়ের জন্য গেলেও দশবার ভেবে, ভালোমতো খোজখবর নিয়ে যাওয়া উচিত (পারলে বিরত থাকাই শ্রেয়)। ঈমানদার মুসলিম ওখানে গিয়ে বিপদে পড়েছে এরকম অনেকের কাছে শুনেছি।
বেশ অতীতে আমি একবার সাঙ্গপাঙ্গ সহ সময় নিয়ে আলাষ্কায় গিয়েছিলাম। গ্রী®§ কাল ছিল তখন (জুন-জুলাই)। প্রবাসী বাঙালী সাধারনত বেশী ভ্রমন করে না, ছাত্রাবস্থায় প্রথম প্রথম কাছে ধারে ঘুরলেও , পরে মোটামুটি আত¥ীয় স্বজনের বাসায় যাওয়া ছাড়া বাঙালীকে ঘরোয়া আড্ডা , পরচর্চা আর দাওয়াত চক্র থেকে বের করা মুষ্কিল। এছাড়া খরচের ব্যাপারটা তো আছেই। ল্যান্ডষ্কেপ আর বিচিত্র উদ্ভিদ-প্রানীকুল দেখার মতো কাজে কয়েক হাজার ডলার ঢালার মতো উচ্ছন্নে যাওয়া বাঙালী কম আছে। তারওপর আলাষ্কার মতো নিষিদ্ধ এলাকা।
কয়েক বছর আগের ঘটনা অবশ্য। জুনো (Juneau) থেকে অ¨াংকরেজে (Anchorage) গেলাম প্রথমে। তখন ওখানে প্রায় ২০ ঘন্টা দিন। বাকী কয়েক ঘন্টা রাতকে ঠিক রেগুলার রাত বলা যায় না, অনেকটা সন্ধ্যার মতো। যাই হোক মজা বুঝলাম ফেয়ারব্যাংকসে গিয়ে ওখানে রাত আরো কম, জুনে মোটামুটি ২৪ ঘন্টা দিন। বাসে করে যাওয়া যায় আর্কটিক সার্কেলে, যেখান থেকে পুরোপুরি ২৪ ঘন্টা দিন শুরু হয়েছে। আরেকটা ব্যপার আলাষ্কার এসব এলাকা অনেক উত্তরে হওয়ায় সুর্য কখনও দিগন্তের খুব বেশী ওপরে ওঠে না। বাংলাদশের মতো দুপুর ১২টায় মাথার ওপর সুর্য দেখতে পাবেন না। ২৪ ঘন্টা দিনে সুর্য অবশ্য এক জায়গায় স্থির থাকে না, বরং পুরো দিগন্ত বরাবর একটু বাঁকা ভাবে ঘুরতে থাকে। চমত্কার অভিজ্ঞতা ছিল সে টা, আগে বইয়ে পড়েছি শুধু, নিজে দেখে আমি মুগ্ধ। যদিও প্রথম প্রথম ঘুমাতে একটু সমস্যা হচ্ছিল, যেহেতু ঠিক রাত হচ্ছিল না। আলাষ্কার একদম উত্তর প্রান্তে আছে এষ্কিমোদের শহর Barrow, ছোট শহর যদিও, আর্কটিক সাগরের কুলে। শহরটার বিশেষত্ব হচ্ছে এখানে মে মাসের ১০ তারিখ থেকে আগস্টের ২ তারিখ পর্যন্ত সুর্য কখনই ডোবে না। এসব দিন গুলোতে সুর্য সারাক্ষন আকাশে থাকে। আবার নভেম্বরের ১৮ তারিখ রাতে সুর্য ডুবে যায় এবং তারপর ওঠে জানুয়ারীর ২৪ তারিখে। এই সময়ের পুরোটাতে সুর্যের কোন দেখা থাকে না।
তো মুসলিমদের অসুবিধা কি? মাঝে মাঝে রোজার মাস পড়ে যায় মে-জুন-জুলাই-আগস্টে। এখন Barrow তে গিয়ে যদি কারো রোজা রাখার খায়েশ হয় তাহলে তিনমাস না খেয়ে থাকতে হবে। আমার এক ঈমানদার দোস্ত তো পুরো ট্যুরে মাগরেব আর এশার নামাজই পড়তে পারল না, কারন সুর্যাস্ত হয় না । আরেকজন ফতোয়া বের করল এই গন গনে সুর্যের আলোতেই এশা পরা যাবে, টাইম হিসাব করে। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে ছায়ার দৈর্ঘ্য নিয়ে, সুর্য যেহেতু সারাদিনরাত দিগন্তেই থাকে ছায়ার দৈর্ঘ্যও সব সময় থাকে ইয়া লম্বা। সৌদি থেকে লাঠি নিয়ে এসে মাপলেও নামাজের ওয়াক্ত আলাদা করা সম্ভব না। মরমী হায়াহায়া বৈজ্ঞানিকরা অনেক সময় কস্টকল্পিত ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হন, তারা যতই ভুজুং ভাজুং দিন না কেন, সার্বজনীন নীতির পরিনতি দেখে আতকে উঠতে হয়। আসলে হাজার বছর আগে আরবের লোকের আর্কটিক এলাকা নিয়ে কোন ধারনাই ছিল না। আরব উপদ্বীপ বিষুব রেখা থেকে বিশেষ দুরে না, এজন্য ঐ ধরনের এলাকায় সারা বছরে দিন রাত্রির বিশাল কোন পার্থক্য হয় না, অন্যদিকে যতই মেরূর দিকে যাওয়া যাবে এই পার্থক্য ততই বড় হতে থাকবে।
ফজলে ভাইর লেখা থেকে দেখা যায় সব জাতির ওপর রোজা রাখা ফরজ ছিল, অন্তত কোন না কোন সময়ে তাদেরকে এই বানী দেয়া হয়েছিল। বোধ করি আলাষ্কার অধিবাসী এষ্কিমো, এবং আথাবাষ্কানদের ওপরও রোজা রাখার নিয়ম ধার্য ছিল। আধুনিক এষ্কিমোরা এসব নিয়মের ধারে কাছ দিয়েও যায় বলে মনে হয় না। কিন্তু ওরা রোজার ব্যপারটা ভুলে গেল কিভাবে? আমার থিওরী এরকম, বহুকাল আগে ওরা ঠিকই রোজা রাখত, বহুকাল বলতে প্রায় ১৫ থেকে ১৭ হাজার বছর আগে যখন বরফযুগ চলছিল। তখন ওরা সাইবেরিয়াতে ছিল, একটু সাউদার্ন ল্যাটিচ্যুডে, যেখানে দিনরাত্রির ব্যবধান সহনীয়। তখন মাঝে মাঝে গরমের দিনে একটু কষ্ট হতো (১৮ ঘন্টা দিন) তবে রোজা রাখা একদম অসম্ভব ছিল না। পরে ওরা মাইগ্রেট করে বেরিং প্রনালী পার হয়ে আলাষ্কায় আসে। ওরা বেশ অল্প সময়েই এই মাইগ্রেশন করেছিল, ফলে যেটা হয় আলাষ্কায় এসে যথারীতি রোজা রাখা শুরু করল, কিন্তু তখন ছিল মে মাস তাই দিন আর শেষ হয় না, যারা বেশী ঈমানদার ছিল ওরা আগস্ট পর্যন্ত না খেয়ে অপেক্ষা করতে করতে শেষ মেশ মারাই যায়, আর বাকীদের মধ্যে অনেকে ছিল মোশরেক ওরা রোজা না রেখে গোপনে ঠিকই খাওয়া দাওয়া করতে থাকে। ওরা সে যাত্রা টিকে যায়, পরের বছর থেকে মোশরেকরা রোজা রাখার প্রথা উঠিয়ে ফেলে, তাদের বংশধররাই এখনো বেচে আছে। একটা ব্যপার নিশ্চিত না যে এই ঘটনাটা নুহ নবীর বন্যার আগের না পরের। থিওরী অবশ্য ভুলও হতে পারে। আপনাদের কাছে অন্য ব্যখ্যা থাকলে জানাবেন
Original blog and comments - http://www.somewhereinblog.net/utsablog/post/20509
বেশ অতীতে আমি একবার সাঙ্গপাঙ্গ সহ সময় নিয়ে আলাষ্কায় গিয়েছিলাম। গ্রী®§ কাল ছিল তখন (জুন-জুলাই)। প্রবাসী বাঙালী সাধারনত বেশী ভ্রমন করে না, ছাত্রাবস্থায় প্রথম প্রথম কাছে ধারে ঘুরলেও , পরে মোটামুটি আত¥ীয় স্বজনের বাসায় যাওয়া ছাড়া বাঙালীকে ঘরোয়া আড্ডা , পরচর্চা আর দাওয়াত চক্র থেকে বের করা মুষ্কিল। এছাড়া খরচের ব্যাপারটা তো আছেই। ল্যান্ডষ্কেপ আর বিচিত্র উদ্ভিদ-প্রানীকুল দেখার মতো কাজে কয়েক হাজার ডলার ঢালার মতো উচ্ছন্নে যাওয়া বাঙালী কম আছে। তারওপর আলাষ্কার মতো নিষিদ্ধ এলাকা।
কয়েক বছর আগের ঘটনা অবশ্য। জুনো (Juneau) থেকে অ¨াংকরেজে (Anchorage) গেলাম প্রথমে। তখন ওখানে প্রায় ২০ ঘন্টা দিন। বাকী কয়েক ঘন্টা রাতকে ঠিক রেগুলার রাত বলা যায় না, অনেকটা সন্ধ্যার মতো। যাই হোক মজা বুঝলাম ফেয়ারব্যাংকসে গিয়ে ওখানে রাত আরো কম, জুনে মোটামুটি ২৪ ঘন্টা দিন। বাসে করে যাওয়া যায় আর্কটিক সার্কেলে, যেখান থেকে পুরোপুরি ২৪ ঘন্টা দিন শুরু হয়েছে। আরেকটা ব্যপার আলাষ্কার এসব এলাকা অনেক উত্তরে হওয়ায় সুর্য কখনও দিগন্তের খুব বেশী ওপরে ওঠে না। বাংলাদশের মতো দুপুর ১২টায় মাথার ওপর সুর্য দেখতে পাবেন না। ২৪ ঘন্টা দিনে সুর্য অবশ্য এক জায়গায় স্থির থাকে না, বরং পুরো দিগন্ত বরাবর একটু বাঁকা ভাবে ঘুরতে থাকে। চমত্কার অভিজ্ঞতা ছিল সে টা, আগে বইয়ে পড়েছি শুধু, নিজে দেখে আমি মুগ্ধ। যদিও প্রথম প্রথম ঘুমাতে একটু সমস্যা হচ্ছিল, যেহেতু ঠিক রাত হচ্ছিল না। আলাষ্কার একদম উত্তর প্রান্তে আছে এষ্কিমোদের শহর Barrow, ছোট শহর যদিও, আর্কটিক সাগরের কুলে। শহরটার বিশেষত্ব হচ্ছে এখানে মে মাসের ১০ তারিখ থেকে আগস্টের ২ তারিখ পর্যন্ত সুর্য কখনই ডোবে না। এসব দিন গুলোতে সুর্য সারাক্ষন আকাশে থাকে। আবার নভেম্বরের ১৮ তারিখ রাতে সুর্য ডুবে যায় এবং তারপর ওঠে জানুয়ারীর ২৪ তারিখে। এই সময়ের পুরোটাতে সুর্যের কোন দেখা থাকে না।
তো মুসলিমদের অসুবিধা কি? মাঝে মাঝে রোজার মাস পড়ে যায় মে-জুন-জুলাই-আগস্টে। এখন Barrow তে গিয়ে যদি কারো রোজা রাখার খায়েশ হয় তাহলে তিনমাস না খেয়ে থাকতে হবে। আমার এক ঈমানদার দোস্ত তো পুরো ট্যুরে মাগরেব আর এশার নামাজই পড়তে পারল না, কারন সুর্যাস্ত হয় না । আরেকজন ফতোয়া বের করল এই গন গনে সুর্যের আলোতেই এশা পরা যাবে, টাইম হিসাব করে। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে ছায়ার দৈর্ঘ্য নিয়ে, সুর্য যেহেতু সারাদিনরাত দিগন্তেই থাকে ছায়ার দৈর্ঘ্যও সব সময় থাকে ইয়া লম্বা। সৌদি থেকে লাঠি নিয়ে এসে মাপলেও নামাজের ওয়াক্ত আলাদা করা সম্ভব না। মরমী হায়াহায়া বৈজ্ঞানিকরা অনেক সময় কস্টকল্পিত ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হন, তারা যতই ভুজুং ভাজুং দিন না কেন, সার্বজনীন নীতির পরিনতি দেখে আতকে উঠতে হয়। আসলে হাজার বছর আগে আরবের লোকের আর্কটিক এলাকা নিয়ে কোন ধারনাই ছিল না। আরব উপদ্বীপ বিষুব রেখা থেকে বিশেষ দুরে না, এজন্য ঐ ধরনের এলাকায় সারা বছরে দিন রাত্রির বিশাল কোন পার্থক্য হয় না, অন্যদিকে যতই মেরূর দিকে যাওয়া যাবে এই পার্থক্য ততই বড় হতে থাকবে।
ফজলে ভাইর লেখা থেকে দেখা যায় সব জাতির ওপর রোজা রাখা ফরজ ছিল, অন্তত কোন না কোন সময়ে তাদেরকে এই বানী দেয়া হয়েছিল। বোধ করি আলাষ্কার অধিবাসী এষ্কিমো, এবং আথাবাষ্কানদের ওপরও রোজা রাখার নিয়ম ধার্য ছিল। আধুনিক এষ্কিমোরা এসব নিয়মের ধারে কাছ দিয়েও যায় বলে মনে হয় না। কিন্তু ওরা রোজার ব্যপারটা ভুলে গেল কিভাবে? আমার থিওরী এরকম, বহুকাল আগে ওরা ঠিকই রোজা রাখত, বহুকাল বলতে প্রায় ১৫ থেকে ১৭ হাজার বছর আগে যখন বরফযুগ চলছিল। তখন ওরা সাইবেরিয়াতে ছিল, একটু সাউদার্ন ল্যাটিচ্যুডে, যেখানে দিনরাত্রির ব্যবধান সহনীয়। তখন মাঝে মাঝে গরমের দিনে একটু কষ্ট হতো (১৮ ঘন্টা দিন) তবে রোজা রাখা একদম অসম্ভব ছিল না। পরে ওরা মাইগ্রেট করে বেরিং প্রনালী পার হয়ে আলাষ্কায় আসে। ওরা বেশ অল্প সময়েই এই মাইগ্রেশন করেছিল, ফলে যেটা হয় আলাষ্কায় এসে যথারীতি রোজা রাখা শুরু করল, কিন্তু তখন ছিল মে মাস তাই দিন আর শেষ হয় না, যারা বেশী ঈমানদার ছিল ওরা আগস্ট পর্যন্ত না খেয়ে অপেক্ষা করতে করতে শেষ মেশ মারাই যায়, আর বাকীদের মধ্যে অনেকে ছিল মোশরেক ওরা রোজা না রেখে গোপনে ঠিকই খাওয়া দাওয়া করতে থাকে। ওরা সে যাত্রা টিকে যায়, পরের বছর থেকে মোশরেকরা রোজা রাখার প্রথা উঠিয়ে ফেলে, তাদের বংশধররাই এখনো বেচে আছে। একটা ব্যপার নিশ্চিত না যে এই ঘটনাটা নুহ নবীর বন্যার আগের না পরের। থিওরী অবশ্য ভুলও হতে পারে। আপনাদের কাছে অন্য ব্যখ্যা থাকলে জানাবেন
Original blog and comments - http://www.somewhereinblog.net/utsablog/post/20509
2 Comments:
এইবার আপনার সাইটটা চমৎকার দেখাচ্ছে!
কিন্তু আর লেখা নেই কেন? অনেক অনেক লেখা চাই ...
Post a Comment
<< Home